টানা অবরোধে নিত্যপণ্যের বাজারে লাগামহীন উর্দ্ধগতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডট কম :
পাইকারী ও খুচরা বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম। টানা অবরোধে সহিংসতার কারণে পরিবহন ভাড়া দ্বিগুন বেড়ে যাওয়াটাই এ মূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে দাবি করেন পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নিত্যপণ্যের এই দরবৃদ্ধিতে নাভি:শ্বাস ওঠেছে বলে অভিযোগ করেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা।
তবে বাজার ঘুরে দেখা যায়, টানা অবরোধে রাজধানীর পাইকারী বাজারে বেশ প্রভাব পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল শাকসব্জির দাম কেজি প্রতি গড়ে ৫-৬ টাকা করে বেড়েছে।
অবরোধের আগে ও অবরোধের সময়ে বাজারে নিত্যপণ্যের দামে দেখা যায় আকাশ ছোঁয়া ব্যবধান। অবরোধের আগে পাইকারী বাজারে বাধা কপি প্রতি কেজির দাম ছিলো ৮-১০ টাকা অবরোধের সময়ে এখন দাম ১৪-১৫ টাকা, একইভাবে ফুলকপি দাম ছিলো প্রতি পিস ৯-১০ টাকা এখন তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৬-১৮টাকা, টমেটো প্রতি কেজির দাম ছিলো ১২-১৫ টাকা এখন তা দাঁড়িয়েছে ২৫-২৮ টাকা।
এছাড়া অবরোধে আরও কিছু নিত্যপণ্যেও দাম পাইকারী বাজারে বেশ বেড়েছে। অবরোধের আগে প্রতিকেজির খিরা দাম ছিলো ৮-১০ টাকা আর অবরোধের সময়ে বর্তমানে দাম ১২-১৪ টাকা,কাঁচা মরিচ ছিলো ১৪-১৫ টাকা এখন ২০-২২ টাকা, ডিম ডজন ছিলো ৭০-৭৩ টাকা আর এখন তা ৭৫ থেকে ৮২ টাকা।
চাল মিনিকেট দাম ছিলো ৩০-৩৫ টাকা এখন তা ৩৮ থেকে৪২ টাকা। এছাড়া পেয়াজ রসুন, তেল, মসুর ডাল, আটা, চিনি লবন কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা করে।
পাইকারী বাজারের এমন দরবৃদ্ধিও প্রভাবের আঁচ লেগেছে খুচরা বাজারে নিত্য পণ্যের দাম কিনতে আসা ক্রেতাদের।
টানা অবরোধে খুচরা বাজারে ব্যাপক দরবৃদ্ধিতে হতাশ ক্রেতা মহসীন আলী জানান,‘ দুই রাজনৈতিক দলের রেষারেষিতে পড়ে আমাদের করুণ অবস্থা। আমরা কিছুতেই বাজারের এই দামের সাথে তাল মেলাতে পারছিনা।স্কুল শিক্ষক হামিদ মিয়ার মতে, ‘খুচরাবাজারে যে উত্তাপ তাতে খুবই শোচনীয় অবস্থা ন্মিন আয়ের মানুষের।’
শুধু শাক সব্জিই নয়, পেয়াজ, রসুন, গরুর মাংস, খাসির মাংসের দামও অনেকটাই বেড়েছে। তবে মুরগীর দাম কিছুটা কম ছিলো বলে জানিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এছাড়া আরও কিছু পণ্যেও দাম খুচরাবাজাওে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। অবরোধের আগে বাধা কপি খুচরা বাজারে প্রতি পিস ছিলো ১৫-২০ টাকা এখন ২২-২৫ টাকা। ফুল কপি প্রতি পিস খুচরা বাজাওে ছিলো ১৫-১৭ টাকা এখন ২৫-৩০ টাকা।
খুচরা বাজারে টমেটো প্রতি কেজির দাম ছিলো ১৫-২০ টাকা এখন অবরোধের সময়ে তা ৩৫-৪০ টাকা, খিরা প্রতি কেজি ছিলো ১৫-১৮ টাকা এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজির দাম ছিলো ২০-২২ টাকা এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-৪০ টাকা, ডিম ডজন ছিলো ৮০-৮৪টাকা এখন ডজন ৯০-৯৩ টাকা, চাল মিনিকেট কেজিপ্রতি ছিলো ৪২ থেকে ৪৫ টাকা এখন অবরোধে দাম বেড়ে তা ৪৭-৪৯ টাকা।
মসুর ডাল কেজি প্রতি ছিলো ১০৫-১০৮ টাকা এখন তা ১২০-১২২ টাকা, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ছিলো৩০-৩২ টাকা এখন ৩৫-৪০ টাকা, আদা প্রতি কেজি ছিলো ৯০-৯২ টাকা এখন তা ১১০-১১২টাকা, সয়াবিন লিটারে ১১৫ থেকে এখন ১২০ টাকা, রসুনের কেজি ৭০-৭২ টাকা থেকে এখন ৯০-৯২ টাকা, গরুর মাংস ২৮০টাকা থেকে এখন ৩৪০ টাকা, খাসির মাংস ৪৮০ থেকে এখন ৫৫০ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাওরানবাজারে পণ্যবোঝাই ট্রাকের প্রবেশ এখন অনেকটাই কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, ‘অবরোধের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঢাকায় কোন পরিবহন আসতে চায়না । অনেক সময় দ্বিগুন ভাড়া দিয়েও মালামাল আনতে হয়। আর বাড়তি ভাড়া দেয়ার কারণে ফুলকপি, বাধাকপি, টমোটো থেকে শুরু করে সব পন্যর দাম আগের চেয়ে বাড়তি রাখতে বাধ্য হচ্ছে এমন দাবি পাইকারদের।